পোষ্য কোটাকে আঁকড়ে ধরে বারবার নিয়ম ভেঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে নতুন নিয়ম। পিছিয়ে পড়া অকৃতকার্য সন্তানদের পোষ্য কোটার ভিত্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া হচ্ছে আসন। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত পাঁচ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি করা হয় ১৮০৭ জন শিক্ষার্থী।
বিভিন্ন পত্রিকায় বারবার বিভিন্ন শিরোনামে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
কখনো বা ডেইলি স্টারে, কার স্বার্থে চলছে রাবি প্রশাসন?
কখনো ডেইলি ক্যাম্পাস অথবা ইত্তেফাকে, ফেল করেও রাবিতে ভর্তি হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। (তথ্যসূত্র - দৈনিক ইত্তেফাক) এছাড়া বিভিন্ন কোটায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সুযোগ পায় ৪১৬ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে পোষ্য কোটায় ৯৬ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৮৫ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৯৪ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ৪১ জন।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোটা ভর্তির সুযোগ পায় ৫১২ জন। পোষ্য কোটায় ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২৬২ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৯৫ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ৫৫ জন ।
২০২১ - ২২ শিক্ষাবর্ষে ৪৬৪১ টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা দেয় দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী। যার ন্যূনতম পাশ নাম্বার ছিল ৪০ , কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষকদের সন্তানগুলোকে প্রশ্ন করার ভিত্তিতে আসন দেওয়ার জন্য পাশ নাম্বার ৪০ থেকে ৩০ করা হয় এবং ফেল করেও সেই শিক্ষাবর্ষে রাবিতে ভর্তির সুযোগ পায় ৭১ জন শিক্ষার্থী। এবং সেই বছরে মাত্র ১৯. ৩৫ নাম্বার পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয় আসন পায় এক শিক্ষার্থী। এবং বিভিন্ন কোটায় মোট ৪৭৪ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়।
( তথ্যসূত্র - দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস )
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোঠায় ভর্তির সুযোগ পান ৩৯৩ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে পোষ্য কোটায় ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় ২২৩ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৭১ জন এবং ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠী কোটায় ৬০ জন।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোথায় ভর্তি হয় ৪২৮ জন, যার মধ্যে পোষ্য কোটায় ৭৯ জন মুক্তিযুদ্ধা কোটায় ১৯৪ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৯৮ জন এবং ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠী কোটায় ৫৭ জন শিক্ষার্থী।
(তথ্যসূত্র - কালের কন্ঠ )
চলতি বছর জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয় কোটা বাতিল নিয়ে। এ আন্দোলনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সর্বসাধারণ এ আন্দোলনে যোগ দেয় বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র দেখার প্রত্যাশায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখনো সংস্কারের দ্বারা শুরু হয়নি।
তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে এখনো প্রায় চার ধরনের কোটা বহাল রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং শিক্ষক কর্মচারী কর্মকর্তা সন্তানদের পোষ্য কোটা। বিশেষ কোটায় অকৃতকার্য হয়েও নির্ধারিত আসনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে আনা এবং পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা তাই এটি সংস্কারের পক্ষে সম্প্রতি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সম্বনয়ক সালাউদ্দিন আম্মার।
আর এরই ধারাবাহিকতায় স্থাপন করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পাশে পোষ্য কোটার প্রথম কবর ।
পোষ্য কোটা ও স্বজন প্রীতি নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক।
নাহিদ হাসান
অদম্য কণ্ঠ, রাজশাহী ।
0 coment rios: