সরকারি চাকরিজীবীদের লোন সুবিধা ও ব্যক্তিগত লোনের কারণ

সরকারি চাকরিজীবীদের লোন সুবিধা ও ব্যক্তিগত লোনের কারণ

নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে লোন ব্যবস্থা আমাদের দেশে একটি মারাত্মক আলোচক বিষয় সাধারণত সরকারি বেসরকারি লোনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতিমালা থাকলেও সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য লোন নেওয়া একটু সহজ হয়ে দাঁড়ায় তবে বেসরকারি চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে একটু কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়ায় তবে আজকের বিষয়টি মূলত সরকারি চাকুরীজীবীদের জন্য তারা কিভাবে এই লোনটি নিয়ে তাদের কাজে লাগাতে পারবেন এবং কিভাবে লোন গ্রহণ করবেন সেই সুবিধা নিয়ে আজকের বিষয়টি আলোচনা করা হবে তাহলে চলুন শুরু করা যাক -

সরকারি চাকরিজীবীদের লোন সুবিধা ও ব্যক্তিগত লোনের কারণ

আলোচনা বিষয়

  • সরকারি চাকুরীজীবীদের লোন সুবিধা 
  • সরকারি চাকুরিজীবীদের গৃহঋণ গ্যাজেট কি 
  • ইসলামী ব্যাংক কর্তিক সরকারি চাকুরিজীবীদের লোন 
  • সরকারি লোন এর কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য এবং নীতিমালা 

সরকারি চাকরিজীবীদের লোন সুবিধা


বিভিন্ন সংস্থা বা এনজিও লোনের তুলনায় খুব কম ইন্টারেষ্টে সরকারি লোন প্রদান করা হয় আর এটি হচ্ছে সরকারি লোন নেওয়ার প্রধান সুবিধা এবং মাধ্যম সরকারি নীতিমালা অনুসারে জমি জমা ও বাড়ি কিনার ক্ষেত্রে ৯০% বা ৯০ ভাগ ঋণ  দেওয়া হবে সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে। শুধুমাত্র ৯০% সুদ বা মুনাফা অনুপাতে ঋণ সুবিধা পাবেন তারা এবং এর মেয়াদ দেওয়া হবে ২০ বছর থেকে তারও অধিক সময় তবে আরেকটি মজার বিষয় হল পাঁচ শতাংশ বা পাঁচ ভাগ সুদ ঋণগ্রহীতা নিজে পরিশোধ করবে এবং ৪ শতাংশ সুদের পরিমাণ সরকার থেকে ভর্তুকি অনুসারে লোন দিয়ে থাকেন।


আরো একটি নতুন বিষয় হলো যদি ঋণগ্রহীতা মারা যান বা অক্ষমতা হয়ে অবসরে গেলে সেই প্রতিষ্ঠান মূল ঋণ এবং সুদের অর্থ পরিপূর্ণ মাফ করে দিবে এর জন্য সরকার কর্তৃক ৮ স্বদেশের একটি প্রতিনিধি দল অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত সচিবের নিকট দায়িত্ব প্রদান করা হয়ে থাকে চলুন জেনে নেওয়া যাক যে সরকারি চাকরিজীবীর লোন সুবিধা পেতে পারেন তার মোটামুটি ধারণা এবং সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা।  


সরকারি চাকুরীজীবীদের গৃহঋণ গ্যাজেট কি


ঋণ ব্যবস্থার প্রাথমিক ধাপ হল গৃহঋণ গ্যাজেট ফ্ল্যাট কিংবা বাসা বাড়ি তৈরিতে দেওয়া হয়ে থাকে এই লোন এই নীতিমালা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক /কর্মচারীর জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে তবে এই নীতিমালা অনুসারে পহেলা জানুয়ারি ২০২০ সাল থেকে এই ঋণ চালু করা হয়েছে। এই নীতিমালা অনুসারে কিছু সত্য বা নিয়ম কানুন আছে। যেমন:ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে আবেদনকার কে শিক্ষক /বা কর্মচারী হতে হবে এই দিনের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে অবসরের ছুটিতে যাওয়ার এক বছর পর্যন্ত সরকার প্রদান ভিত্তিক ছুটি ভোগের সর্বশেষ দিন পর্যন্ত এই দিন প্রদান করা হবে।


কোন শিক্ষক /বা কর্মচারীর নামে যদি কোন মামলা বা অভিযোগ থাকে তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তদন্ত সাপেক্ষে তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং মামলার চার্জশিট চূড়ান্ত হওয়া পর্যন্ত কোন শিক্ষক /কর্মচারী এই দিন গ্রহণ করতে পারবে না এই ঋণ গ্রহণ করার কিছু শর্ত আছে। চলুন জেনে আসা যাক যেমন :


১।এই নীতিমালা অনুযায়ী আবেদনকারী দেশের যেকোনো জায়গায় বাসা বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। 

২।বাসা বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বাড়ির নকশা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। 

৩।প্রস্তাবিত জমি ও ফ্ল্যাট যে কোন মানুষের দায় হতে মুক্ত থাকতে হবে। 


ইসলামী ব্যাংক কর্তৃক সরকারি চাকুরীজীবীদের লোন


সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। তবে লোনের পরিমাণ নির্ভর করে আপনার সেলারি বা বেতন কত তার ওপর। অন্য ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংক লোন এর সুবিধাটা বা প্রসেসটা একটু জটিল বিধায় কেউ কেউ সামান্য সমস্যায় ভোগেন। লোনের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ বিনিয়োগ শব্দটি ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংকে লোন নিতে আপনার চাকুরীর মেয়াদ প্রায় কয়েক বছর হতে হবে লোন নেওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে এপ্লাই করতে হবে বিগত কয়েক  মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে ইসলামী ব্যাংকের লোনের ক্ষেত্রে আপনাকে নিম্নত্বক বিষয়গুলো জেনে রাখতে হবে যেমন :


১।লোন নিতে আপনাকে সর্বপ্রথম ইসলামী ব্যাংকের যে কোন শাখায় যেতে হবে। 

২।আপনি যে বিষয়ে লোন নিবেন তার সকল বা বিস্তারিত আলোচনা সেই ব্যাংকের ম্যানেজার/কর্মচারীর সাথে আলোচনা করতে হবে। 

৩।লোন নিতে আপনার চাকরির সকল ডিটেলস বা নথি পত্র প্রমাণসহ তাদের নিকট হস্তান্তর করতে হবে। 

৪।আপনার ভোটার আইডি কার্ড /এন আই ডি ছবি এবং ব্যক্তিগত সকল কাগজপত্র সাথে নিয়ে যেতে হবে। 

৫।আপনার ৫০০০০ হাজার টাকার উপরে হলে আপনি ১০ লক্ষ টাকা লোন নিতে পারবেন। 


সরকারি লোন এর কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য এবং নীতিমালা


সরকারি কর্মচারী বিভিন্ন মেয়াদ ও ভিন্ন ভিন্ন খাতের লোন গ্রহণ করতে পারেন আপনাদের জানা দরকার দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তির কিছু শত টাকার পরিমান ও কিস্তির পরিমাণ -


গৃহ নির্মাণ : তিন বছরের বেতন অথবা এক লক্ষ (৩০০০০০) হাজার টাকা কিস্তিতে। 

মোটরগাড়ি : এক বছরের বেতন অথবা( ৬০০০০) টাকা কিস্তিতে নিতে পারেন। 

কম্পিউটার : ২০ কিংবা( ৩০০০০০)ত্রিশ হাজার টাকা কিস্তিতে নিতে পারেন আপনি।


উপসংহার


আশা করি আপনারা আমাদের আজকের এই  আটিকেল থেকে সরকারি চাকুরীজীবীরা কিভাবে লোন নেবেন এবং কিভাবে লোন ব্যাংক থেকে উত্তোলন করবেন এবং ঋণের ইন্টারেস্ট ব্যাসিক ধারণা আপনারা জানতে পেরেছেন তবে আজকের এই তথ্য গুলো শুধু সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে আশা করি এখান থেকে অনেকেই অনেকভাবে উপকৃত হবেন। আর এটাই আমাদের যাওয়া। এবং ভালোবাসা ধন্যবাদ সবাইকে। 



বিগত ৫ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি করা হয় ১৮০৭ জন শিক্ষার্থী

বিগত ৫ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি করা হয় ১৮০৭ জন শিক্ষার্থী

পোষ্য কোটাকে আঁকড়ে ধরে বারবার নিয়ম ভেঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে নতুন নিয়ম। পিছিয়ে পড়া অকৃতকার্য সন্তানদের পোষ্য কোটার ভিত্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া হচ্ছে আসন। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত পাঁচ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি করা হয় ১৮০৭ জন শিক্ষার্থী। 

বিগত ৫ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি করা হয় ১৮০৭ জন শিক্ষার্থী

বিভিন্ন পত্রিকায় বারবার বিভিন্ন শিরোনামে উঠে এসেছে এমন তথ্য। 
কখনো বা ডেইলি স্টারে, কার স্বার্থে চলছে রাবি প্রশাসন? 
কখনো ডেইলি ক্যাম্পাস অথবা ইত্তেফাকে, ফেল করেও রাবিতে ভর্তি হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। 

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। (তথ্যসূত্র - দৈনিক ইত্তেফাক) এছাড়া বিভিন্ন কোটায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সুযোগ পায় ৪১৬ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে পোষ্য কোটায় ৯৬ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৮৫ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৯৪ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ৪১ জন। 

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোটা ভর্তির সুযোগ পায় ৫১২ জন। পোষ্য কোটায় ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২৬২ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৯৫ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ৫৫ জন । 

২০২১ - ২২ শিক্ষাবর্ষে ৪৬৪১ টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা দেয় দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী। যার ন্যূনতম পাশ নাম্বার ছিল ৪০ , কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষকদের সন্তানগুলোকে প্রশ্ন করার ভিত্তিতে আসন দেওয়ার জন্য পাশ নাম্বার ৪০ থেকে ৩০ করা হয় এবং ফেল করেও সেই শিক্ষাবর্ষে রাবিতে ভর্তির সুযোগ পায় ৭১ জন শিক্ষার্থী। এবং সেই বছরে মাত্র ১৯. ৩৫ নাম্বার পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয় আসন পায় এক শিক্ষার্থী। এবং বিভিন্ন কোটায় মোট ৪৭৪ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়।
( তথ্যসূত্র - দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস )

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোঠায় ভর্তির সুযোগ পান ৩৯৩ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে পোষ্য কোটায় ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় ২২৩ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৭১ জন এবং ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠী কোটায় ৬০ জন।

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোথায় ভর্তি হয় ৪২৮ জন, যার মধ্যে পোষ্য কোটায় ৭৯ জন মুক্তিযুদ্ধা কোটায় ১৯৪ জন প্রতিবন্ধী কোটায় ৯৮ জন এবং ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠী কোটায় ৫৭ জন শিক্ষার্থী।
(তথ্যসূত্র - কালের কন্ঠ )

চলতি বছর জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয় কোটা বাতিল নিয়ে। এ আন্দোলনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সর্বসাধারণ এ আন্দোলনে যোগ দেয় বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র দেখার প্রত্যাশায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখনো সংস্কারের দ্বারা শুরু হয়নি। 

তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে এখনো প্রায় চার ধরনের কোটা বহাল রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং শিক্ষক কর্মচারী কর্মকর্তা সন্তানদের পোষ্য কোটা। বিশেষ কোটায় অকৃতকার্য হয়েও নির্ধারিত আসনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে আনা এবং পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা তাই এটি সংস্কারের পক্ষে সম্প্রতি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সম্বনয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। 
আর এরই ধারাবাহিকতায়  স্থাপন করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পাশে পোষ্য কোটার প্রথম কবর । 
পোষ্য কোটা ও স্বজন প্রীতি নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক।

নাহিদ হাসান 
 অদম্য কণ্ঠ, রাজশাহী ।